দীর্ঘ ১৮ মাস বাসা বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে গৃহকর্ত্রী ধারা নির্যাতনের শিকার হয় শিশু আকলিমা। তাকে খাওয়ানো হয় বাচ্চার প্রস্রাব ও বমি। এই নির্যাতনের সংবাদ সিটি নিউজ ঢাকা,দীপ্ত টিভি,প্রতিদিনের কথা ও মাগুরার ঘটনাসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর শিশু আকলিমার পাশে দাঁড়ায় সৌদি প্রবাসী এক যুবক। ওই সৌদী প্রবাসী শিশুটির চিকিৎসার জন্য এককালীন অর্থ প্রদান করেন।
এছাড়া শিশুটির ভবিষ্যতের জন্য প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে ওই প্রবাসীর পক্ষে শিশু আকলিমার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন দীপ্ত টিভি,সিটি নিউজ ঢাকা,প্রতিদিনের কথা ও মাগুরার ঘটনা এর মাগুরা জেলা প্রতিনিধি কাসেমুর রহমান শ্রাবণ। এছাড়া বাংলা ভিশন টেলিভিশনের মাগুরা জেলা প্রতিনিধি রবিন শরিফ শিশুটির সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন। এর আগে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে দীর্ঘ ১২ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি যান শিশু আকলিমা।
আকলিমা মাগুরা সদর উপজেলার বাহারবাগ গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে। প্রায় তিন বছর আগে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর কুবাদ কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে শিশু আকলিমার দায়িত্ব পড়ে তার দাদা-দাদির উপর। দাদা-দাদী প্রথমে শিশুটিকে মাদ্রাসায় ও পরে একটি স্কুলে ভর্তি করে। এরপর অসচ্ছলতার কারণে প্রতিবেশী মাসুদুর রহমান বাবু বিশ্বাস এর পরামর্শে তার শিশু সন্তানকে দেখাশোনার জন্য ঢাকাতে কাজের উদ্দেশ্যে জান শিশু আকলিমা। এরপর ১৮ মাস কাজের জীবনে তার উপরে অমানবিক নির্যাতন চালান বাবু মিয়ার স্ত্রী লিপি বেগম। সম্প্রতি আকলিমার বাড়িতে একটা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তার দাদা দাদি বাবু মিয়া কে অনুরোধ করে আকলিমাকে মাগুরাতে নিয়ে আসতে।গত ২২ ডিসেম্বর আকলিমাকে মাগুরাতে নিয়ে আসলে তার কঙ্কালসার শরীর দেখে দাদা-দাদী তাকে এ অবস্থার কারণ জানতে চাইলে সে উপরোক্ত নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এরপর ২৩ ডিসেম্বর মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি করায় শিশু আকলিমাকে। ওই রাতেই শিশুটির দাদা তজলু শেখ বাদী হয়ে বাবু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী লিপি বেগমকে আসামি করে শিশু নির্যাতন আইনে ৪/২ ধারায় মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই মাগুরার কলেজপাড়ার বাসা থেকে নির্যাতনকারী ওই গৃহবধূ লিপি বেগমকে আটক করে পুলিশ।