জ্যান্ত সাপ চিবিয়ে খাওয়ার দৃশ্য হয়তোবা আমরা কম লোকেই দেখেছি। তেমনি আজ আপনারা ভিডিওতে যে মানুষটিকে দেখতে পারছেন তার নাম ফারুক হোসেন । ফারুক হোসেনর বাড়ি মাগুরা সদরের স্টেডিয়াম পাড়ায়।
ভিডিও লিংক:
লিংকে ক্লিক: জ্যান্ত তাজা সাপ খাওয়ার দৃশ্য সাপুড়ের
তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন সাপ ধরা। গ্রামের ভাষায় আমরা যাকে সাপুড়ে বলি। ছোট বেলা থেকে ফারুক হোসেনের চিন্তা ভাবনা ছিলো অন্যরকম। ব্যাক্তি জীবনে মানুষ হিসেবে তিনি কেমন। এমন প্রশ্ন হয়তোবা আপনাদের মনে নাড়া দিতে পারে। সমাজে তাদের স্থানই বা কোথায়। সামান্য জীবিকার জন্য যাদের এত লড়াই সংগ্রাম করতে হয় আমরাতো তাদের পাশে নেই। সাপ খেলা দেখানো যার কাজ তার জীবন কেমন হতে পারে তা হয়তোবা আপনার অনেকেই উপলদ্ধী করতে পারবেন না। পকেটে যখন টাকা থাকে না তখন মানুষের কতই না রুপ দেখা যায়। তবুও পেশা যাই হোক সেটা ছোট নয়। কিন্তু সাপ খেলা দেখানো, সাপ ধরা এটা আবার কেমন পেশা। যে পেশায় জীবন-মৃত্যুর সময় থাকে না। কিন্তু জীবন মৃত্যুর পথ চেয়েতো আর পেট চলে না।
৯ জুন বুধবার, বিকাল ৪টা বাজে ঘড়ির কাটায় তখন। মাগুরা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে রাঘবদাইড় বাজার। এ বাজারটির সুনাম আছে প্রাচীন কাল থেকে। সাধারনত গ্রাম অঞ্চলের হাট-বাজার গুলোতে লোক আসতে শুরু করে দুপুর থেকে। তপ্ত রোদ্রে হাটের বেচা-কেনা জমে উঠেছে বেস। মানুষের ভীড়ে কোথাও দাড়াবার ঘোর নেই। একটু দূরে যেতেই গোল বৃত্তের ন্যায় মানুষেরা জটলা পাকিয়ে কি যেন দেখছে। কেীতূহলে আমিও হাজির জটলা পাকানো মানুষের ভীড়ে।
বাহ্ সাপ খেলা। কত দিন হলো আমি সাপ খেলা দেখি না। আগ্রহ সহকারে বসে আছি সাপ খেলা দেখবো বলে। কিন্তু সাপুড়ের বকবকানি আর শুনতে ভালো লাগছে না। ধূর চলেই যাই ! না আরেকটু থাকি । এই যে সাপুড়ে ভাই সাপ খেলা কি দেখাবেন না বাড়ি চলে যামু…!
আরে ভাই আমি সাপ খেলা দেখাই না আমি সাপ খায়..! পতি উওরে আমি বল্লাম ভাই মসকরা না করে একটু খেলা দেখান চলে যাই।
সাপুড়ে…চুপ করে বসেন ..বসে যান। কিছু সময় পরে সাপুড়ে একটি কাটের বাক্স মধ্যে থেকে একটি সাপ বের করে গোল বৃত্ত করা মানুষের জটলা পাকানো সারিতে ঘুরতে লাগলো। দেখতে ভালোই লাগছিলো। এই বুঝি সাপ খেলা দেখাবে।
মনে একটা প্রশান্তি এলো। বেহুলা লক্ষিন দার কি এবার হাজির হলো। ওটাতো গল্প কাহিনী।
সাপুড়ে চারিদিকে ঘুরতে থাকে আর জ্যান্ত তাজা সাপ মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেতে থাকে। এটা বাস্তবে কি সম্ভব। কিন্তু না ..! অনেক সময় ধরে সাপুড়ে তার মুখে সাপের শরীরের কিছু অংশ চিবিয়ে খাচ্ছে। সত্যিই চোখের সুন্দরর্য…! দেখতে খুব ভালো লাগছে কিন্তু আবার ভয়ও করছে। বিষোধর সাপ…! সাপুড়ের আবার কিছু হবে নাতো …
মনে মনে চুপ করে বল্লাম সাপুড়েরাতো তন্ত্র-মন্ত্র যানে কিছু হবে না।
সব শেষ এবার তন্ত্র-মন্ত্র ছেড়ে বাস্তবে আসি। পেটের খুদা বুকে লাগে ভাই…! এবার তোরা যে যার পকেটে হাত দে ভাই…!
১০ টাকা পারো ২০ টাকা পারো দিয়ে দে ভাই । কষ্ট করে খেলা দেখালাম তার মূল্যে দে ভাই। বাড়ি ছেলে মেয়ে আছে পথ চেয়ে বসে।
টাকার মূল্যের চেয়ে জীবনের মূল্য সাপুড়ের কাছে মূল্যহীন।
এভাবে আর কত জন টাকা দিবে।
তাবিজ কিনবি ভাই …! এটা কাছে থাকলে তোর সব আপদ-বিপদ দূর হবে থাকবেনা আর কোন ভয়।
সব কিছুর মূল্য টাকা দিয়ে হয় না। জীবনের মূল্য আমাদের কাছে অর্থহীন মনে হয়।
তাইতো সমাজে আজও মানুষ বিচিত্র, নানা বর্নের, নানা ধর্মের ,নানা কর্মের।