মাগুরায় ভালো নেই সংবাদপত্র বিক্রেতারা । প্রতিদিন ভোর থেকে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি,দোকান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ হাটে-বাজারে রাস্তা-ঘাটে সংবাদপত্র নিয়ে ছুটাছুটি করে সংবাদপত্র হকাররা । রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে সাইকেল চালিয়ে কাজ করতে হয় তাদের । সপ্তাহের শুক্রবারও ছুটি নেই তাদের । পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটি কাটানোর মতো সময় নেই তাদের । সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে অনেকদিন বিকাল পর্যন্ত কাজ করতে হয় তাদের । ঈদকে সামনে রেখে অনেক সময় সংবাদপত্র বাহী যানবাহন জেলায় দেরি করে আসলে তখন তাদেও কষ্টের সীমা নেই ।সংবাদপত্র বাহী যানবাহন কখনো কখনো বেলা ১২টা অথবা ২ টার সময় পৌছায় তখন হকারদের সংবাদপত্র বিলি করতে সন্ধ্যাও হয়ে যায় । নানা প্রতিকুল অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলে তাদের জীবন-জীবিকা ।
বর্তমানে লকডাউনে বিপাকে পড়েছে জেলায় শতাধিক সংবাদপত্র বিক্রেতা হকাররা । লকডাউনে দোকানপাট,ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,অফিস-আদালত,ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে তাদের ব্যবস্যা দুর্দিন যাচ্ছে ।
সংবাদপত্র বিক্রেতা আকতার হোসেন জানান,আমি এ পেশার সাথে ৩০-৩২ বছর জড়িত । সংবাদপত্র বিক্রি করে আমার সংসার চলে । পূর্বে যেখানে ২শ’ থেকে ৩শ’ কাগজ বিক্রি হতো বর্তমানে তা নেমে ১শ’তে এসেছে । আমাদের সংবাদপত্র মুলত বিত্রি হয় দোকানে ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানে কিন্তু লকডাউনের কারণে কাজজের চাহিদা কমে গেছে বিক্রিও কম । বড় দুর্দিন যাচ্ছে আমাদের । এখনো কোন সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা আমরা পায়নি । তাই পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে আছি ।
ছবি : দৈনিক মাগুরা
নুরু নামে এক হকার জানান, আমি সংবাদপত্র বিক্রি করছি ২৫ বছর । আগে শহরে,বাজারে,অফিস,বাসা বাড়ি,দোকানে ৪শ’ থেকে ৫শ’ কপি কাগজ চলতো । বর্তমানে টানা লকডাউনে আমাদের সংবাদপত্র বিক্রিতে ভাটা পড়েছে । মাসিক ভিত্তিতে কিছু কাগজ চলছে । লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকার কারণে কাগজ চলছে না । পরিবার পরিজন নিয়ে বর্তমানে খবুই মানবেতর জীবন যাপন করছি ।
আকামত,অসিত,খোকন,আবু ও সাগরসহ অনেকে জানান, লকডাউনে কাগজ বিক্রি খুবই কম । কঠোর লকডাউনে সব কিছু বন্ধ থাকার কারণে সাধারণ মানুষ কাগজ পড়ছে না । আমাদের কাগজ মুলত বিক্রি হয় দোকানে ও ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানে কিন্তু লডডাউনে সংবাদপত্র বিক্রিতে ভাটা পড়েছে ।আমরা পায়নি কোন ত্রাণ । পায়নি কোন সরকারি সহায়তা । কাগজ বিক্রি করে চলে আমাদের সংসার । এভাবে অব্যাহত লকডাউন থাকতে আমাদের পথে বসতে হবে ।
মাগুরা সংবাদপত্র এজেন্সী খান শরাফত হোসেন বলেন, লকডাউনে আমাদের সংবাদপত্র বিক্রি কমে গেছে । আমার নামে ২০টি কাগজ আসে । টানা লকডাউনে কাগজ বিক্রি কমে যাওয়ায় আমরা বিপাকে আছি । সেই সাথে আমার ১০-১২ জন সংবাদ বিক্রেতাদের অবস্থা চলছে খবুই খারাপ । আমরা মাঝে মাঝে তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছি ।