নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অশ্লীল ভিডিও ধারন ও জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবীর অভিযোগে দুই সহযোগী নারীসহ চক্রের মুলহোতা গ্রেফতার।
২৮মে (রবিবার ২০২৩ইং) তারিখে অভিযোগের ভিত্তিতে মাগুরা ডেফুলিয়া গ্রামের শামসু বিশ্বাস(৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা নতুন বাজার এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে তাকে আটকে রেখে তার মোবাইল দিয়ে তার পরিবাবের কাছে ১ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে ওই নারীরা, টাকা না দিলে শামসু বিশ্বাসকে নারী দিয়ে ফাসিয়ে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে বলে হমুকি দেন এবং তাকে মেরে গুম করার কথা বলেন তার পরিবারকে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাগুরা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অপহরন কৃত ব্যক্তিকে উদ্ধারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল,সিসিআইসি টিমকে নির্দেশ প্রদান করেন ।পরে সাইবার টিম ও ডিবি পুলিশের একটি চৌকশ টিম এটা নিয়ে কাজ শুরু করে ইতিমধ্যে অভিযোগকারির সাথে উদ্ধার অভিযানের সদস্যরা যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে। অভিযোগকারীর কাছ থেকে জানা যায় অপহারন কারীরা মুক্তিপণ গ্রহণের জন্য একটা বিকাশ মোবাইল নাম্বার প্রদান করেছে। উক্ত বিকাশ নাম্বারে আধা ঘন্টার মধ্যে মুক্তিপনের টাকা প্রদান না করলে তাকে মেরে ফেলবে এবং তার খারাপ ভিডিও করে ছেড়ে দেবে বলে ভয় ভিতি দেখাতে লাগে।
পরে পুলিশের উদ্ধারকারি টিম আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ও স্থানীয় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাগুরার নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মুল হোতাসহ সহযোগি দুই নারীকে আটক করে এবং ভিকটিম শামসু বিশ্বাস(৩৬) কে উদ্ধার করে।
সাংবাদিক সংম্মেলনে মাগুরা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে প্রতারণা করে আসছিল বলে তাদের জিজ্ঞসাবাদে জানা যায়। এই চক্রের মূলহোতা নিজনান্দুয়ালী এলাকার মৃত সালেক শেখের ছেলে শাহিনুর শেখ(৪২) আর অপর দুইজন কুদ্দুসের স্ত্রী জুলেখা (৩৫) ও জাকির ওরফে অপুর স্ত্রী নদী(৩৫) তার সহযোগি। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় নদীর মোবাইল নাম্বার থেকে টার্গেট ব্যক্তিদেরকে ফোন করে সম্পর্ক গড়ে তোলে, এক পর্যায়ে একসাথে দেখা করার কথা বলে টার্গেট ব্যক্তিকে মাগুরায় নতুন বাজার এলাকায় ডেকে এনে কৌশলে নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় জুলেখার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই মুল হোতা শাহিন ওৎপেতে থাকে, ভিকটিমকে রুমে নিয়েই তাকে উলঙ্গ করে চক্রের নারী সদস্যরা তাদের সাথে আপত্তিকর অবস্থা তৈরি করে আর শাহিন তার নিজ মোবাইল দিয়ে তা ভিডিও করে। তারপর অপহরন কৃত ব্যক্তির ফোন থেকেই তার বন্ধু/আত্মীয়দের কাছে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে আর মারতে থাকে। আসামী শাহিনের মোবাইল ডিভাইস থেকে এরকম কয়েকজনের জোরপূর্বক অশ্লীল ভিডিও ধারনের প্রমান মিলেছে। এই বিষয়ে আরো তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আটক কৃত আসামী শাহিনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে অস্ত্রসহ অপহরণ করে ২ টি খুনের মামলাসহ একাধিক মাদক ও চুরির মামলাসহ সর্বোমোট ০৬টি মামলা রয়েছে।
অপহরনের এই সংক্রান্তে বিষয়ে মাগুরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।