মাগুরায় পাটের বাজার অবৈধ মজুদদারদের দখলে চলে গেছে । পাটের ভরা মৌসুমে প্রকৃত পাট ব্যবসায়ী পর্যাপ্ত পাট কিনতে পারছেন না । গত বছর এ সময় জেলার পাট বাজারগুলো ছিল জমজমাট । বর্তমানে জেলায় কিছু অবৈধ পাটের মজুদদাররা দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকের বাড়ি থেকে স্বল্প মূল্যে পাট ক্রয় করে মজুদ করছে বলে অভিযোগ করেছেন পাট ব্যবসায়ীরা । ফলে পাটের বাড়তি দাম পাচ্ছেন না প্রান্তিক কৃষকরা । বাজারে বর্তমানে শ্যামলা পাট ৩ হাজার ১শ’ টাকা ,মিল শার্ট পাট ২ হাজার ৯শ’ টাকা ও অন্যান্য পাট ২ হাজার ৬শ’ থেকে ২ হাজার ৮শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।
মাগুরা নতুন বাজারের লাইন্সেসধারী পাট ব্যবসায়ী বিশ্বাস টের্ডাসের সত্ত¡অধিকারী আমিনুর রহমান বলেন, আমরা পাটের বৈধ লাইন্সেসধারী ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে এ বাজারে পাটের ব্যবসা পরিচালনা করছি । বর্তমানে পাটের ভরা মৌসুমে আমরা পাট কিনতে পারছি না । কৃষকরা এখন হাটে পাট নিয়ে আসছে না । গত বছর এ সময় পাটের বাজার ছিল খুবই জমজমাট । দামও ছিল ভালো । বাড়তি দাম পেয়ে কৃষকরা খুশি ছিল । বর্তমানে উঠতি কিছু অবৈধ মজুদদারদের দখলে চলে গেছে পাটের বাজার । তারা কৃষকের বাড়ি বাড়ি থেকে পাট ক্রয় করে নিজেদের পাটের গুদামে মজুদ করছে । বাজার যখন চড়া হচ্ছে ঠিক তখন তারা আমাদের নিকট বিক্রি করছে । ফলে প্রকৃত পাটের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি বাজার তদারকির ব্যবস্থা থাকত তাহলে এসব অবৈধ মুজদদারদের দৌরাত্ব কিছুটা কমতো ।
নতুন বাজারের অন্য পাট ব্যবসায়ী উত্তম কুমার জানান, আমি পাট ও ভ‚মিমালের ব্যবসা করি । বর্তমানে পাটের বাজার খুবই মন্দা । আমি আশানুরুপ ভাবে পাট ক্রয় করতে পারছি না । সপ্তাহে ২ দিন হাট । এ হাট বারে পাটের বাজার থাকতো জমজমাট কিন্তু কিছু উঠতি মজুমদারদের দখলে চলে গেছে পাটের বাজার । আমরা প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে পাট ক্রয় করতে পারছি না । কৃষক পাট নিয়ে আর হাটে বিক্রি করতে আসছে না । তাই পাটের ব্যবসায়ীরা রয়েছে বিপাকে । আমাদেও প্রতিটি গুদামে নেই পর্যাপ্ত পাট মজুদ নেই । ফলে এবার মিলে পাট দেওয়া নিয়ে আমরা রয়েছি শঙ্কিত ।
মাগুরা পাট ও ভুমিমাল সমিতির সভাপতি জানান, এবার পাটের বাজার জমছে না । হাটে পর্যাপ্ত পরিমানে পাট না আসায় পাটের ব্যবসায়ীরা পাট ক্রয় করতে পারছেন না ।পাটের কিছু উঠতি মজুমদারদের দৌরাত্ব আমরা লক্ষ্য করছি । এ সব মজুদদারদের নেই কোন লাইন্সেস ,নেই কোন কাগজপত্র । অথচ তারা নেপথ্যে চোখের আড়ালে থেকে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । আমরা তাদের বিষয়ে খোজ খবর নিচ্ছি এবং পরবতীতে সব উঠতি ব্যবসায়ীদের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।
চলতি বছর জেলায় ৩৫ হাজার ৮২০ হেক্টও জমিতে পাট আবাদ হয়েছে । তার মধ্যে সদরে ১১ হাজার ৫০ হেক্টর,শ্রীপুরে ১০ হাজার ৮৫ হেক্টও,শালিখায় ৩ হাজার ৮৮৫ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে ।