বানিয়াবহু-কাওড়া কাদেরিয়া আলিম সিনিয়র মাদ্রসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। বাড়ি থেকে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে। পায়ে হেটে ভ্যানে চড়ে মাদ্রাসায় আসত সে। প্রায় আসতে দেরি হওয়ায় শিক্ষকদের কাছে বকা খেতে হতো তাকে। সহপাঠীরা বাইসাইকেলে মাদ্রসায় আসলেও তার নিজের সাইকেল নেই । দরিদ্র পরিবার হওয়ায় তার বাবার পক্ষে সাইকেল কেনা ও সম্ভব নয়। মঙ্গলবার আফসানা নতুন ঝকঝকে চকচকে একটি বাইসাইকেল পেয়েছে – তাও বিনামেূল্যে। শুধু আফসানা নয় গতকাল মঙ্গলবার মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরে রাজা সীতারাম রায়ের কাছারি বাড়ি প্রাঙ্গণে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলের ২০০কিশোরী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুজিব শতবর্ষে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় মেধাবী ছাত্রীদের মাঝে বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়। মহম্মদপুর উপজেল প্রশাসন সাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মেয়েরা বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে গেলে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাদের বিচরণক্ষেত্র অনেক বড় হয়। জানাবোঝার পরিধিও বেড়ে যায়। এটাই নারীর ক্ষমতায়নের প্রথম ধাপ। এখন বাইসাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়ার মধ্যে মেয়েদের লজ্জা বা ভয়ের কিছু নেই। বাইসাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহম্মদপুর উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপপরিচালক (স্থানয়ি সরকার) মো: কামরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল ও শিকদার মিজানুর রহমান প্রমুখ। বাইসাইকেল পেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত ও শামীমা খাতুন জানায়, স্কুল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অ্যাড়েন্দা গ্রামে তাদের বাড়ি। বাড়ি থেকে প্রতিদিন হেঁটে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয়। রাস্তায় ভ্যান চলাচল করলেও প্রতিদিন ভাড়া দেওয়া দিনমজুর বাবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যে কারণে বেশির ভাগ দিন হেঁটেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতে হয়। এতে প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়। এ বাইসাইকেল পেয়ে সেই কষ্ট দূর হলো।
আয়োজকেরা জানান, নারীশিক্ষা এগিয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এলজিএসপি প্রকল্পের টাকা থেকেপ্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০টি বাইসাইকেল কিনে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির মেয়েদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।