আর কয়েকদিন পরেই স্বরসতী পূজা ।মাগুরা শহরের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে জেলার মধ্য সব থেকে বেশি স্বরসতী পূজার প্রতিমা তৈরি হয় সেখানে । এখান থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা প্রতিমা কেনার জন্য আসে এবং বায়না করে যায় । কিন্ত এ বছর করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে । ফলে প্রতিমা বিক্রি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কারিগররা । তাই লোকশানের আশঙ্কা করছেন ।
বিদ্যার দেবী স্বরসতী। সত্যা,ন্যায় ও জ্ঞানলোকের প্রতীক। তাই তার কৃপা লাভের আশায় অনুষ্ঠিত হয় পূজা-অর্চনা। অজ্ঞতার অন্ধকার দুর করতে,কল্যানময়ী দেবীর চরনে ফুল দিয়ে প্রণতি জানান ভক্তরা।
মাগুরা শহরের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে স্বরসতী প্রতিমা তৈরি কারখানায় প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ । এখানে ছোট বড় দিয়ে মোট তিন কারখানা রয়েছে। আগামী মাসের প্রথমদিকে স্বরসতী পূজা হওয়ার কথা । প্রতিমা বিক্রি না হওয়ায় কারিগরদের মাথায় হাত ।
মাগুরা ছানা বাবুর বটতলা স্বরসতী পূজার আয়োজক বাপি সাহা বলেন, করোনা ভাইরাস মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সরকার ঘোষিত বিধি নিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে, কোন লোক সমাগম করা যাবে না। তাই এ বছর সল্প পরিসরে পূজা করা হবে। তবে কোন উৎসব আমেজ থাকছে না।
স্বাস্থ্য বিধি মেনে দেবীর আরাধনা ও অঞ্জলী প্রদান করা হবে।
সরেজমিনে প্রতিমা তৈরি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটা কারখানায় শতাধিক প্রতিমা তৈরি হয়েছে। সবকয়টি প্রতিমায় রোদ্রে শুকানোসহ চলছে সাজ-সজ্জার কাজ।
প্রতিমা তৈরীতে ব্যাস্ত কারিগররা। ছবি: দৈনিক মাগুরা
মাগুরা প্রতিমা শিল্পী মানিক বৈদ্য বলেন, দুই মাস ধরে দিন রাত পরিশ্রম করে স্বরসতী প্রতিমা তৈরি করেছি। হঠাৎ করোনা রোগী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্কুল,কলেজ বন্ধ ঘোষনা করেছেন সরকার। যে কারনে পূজার সংখ্যার কমিয়েছেন আয়োজন কমিটি। বিশেষ করে স্কুল,কলেজে বেশি স্বরসতী পূজা হয়। এ বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পূজা হবে না। অনেকেই বায়না করা প্রতিমার টাকা ফেতর নিয়ে যাচ্ছেন। এতে আমরা প্রতিমা শিল্পীরা লোকশানে আছি। কারখানায় থাকা প্রতিমাগুলো বিক্রি হবে না। আমরা কি ভাবে চলবো। এই প্রতিমা বিক্রি টাকায় আমাদের সংসার চলে। তিনি আরো বলেন, আমার কারখানায় পাঁচশত টাকা থেকে শুরু করে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমা রয়েছে। যারা বাড়িতে পূজা করতো তারাও পূজা করছে না। প্রতিমা যদি বিক্রি না করতে পারি তাহলে চরম লোকশান হবে আমাদের।
ডাটিকাডাঙ্গা গ্রামের নবগঙ্গা নদীর পাড়ে রয়েছে আর একটি প্রতিমা তৈরি কারখানা সেখানে কথা হয় প্রতিমা শিল্পী সরজিত অধিকারের সাথে তিনি বলেন, আমার কারখানায় প্রায় ১০ জন লোক রয়েছে। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরি করছেন। তাদের বেতন, রং,তুলির দাম বৃদ্ধি। তাছাড়া প্রতিমা বিক্রি করতে পারছি না।কর্মচারিদের বেতন দিতে পারছি না। আমাদের এই প্রতিমা তৈরির টাকা থেকে সংসার খরচসহ সকল প্রকার ব্যয় হয়ে থাকে। এ বছর অধিকাংশ প্রতিমায় কারখানায় পড়ে থাকবে। প্রতিমা বিক্রি না হলে আমরা চরম লোকশানের মুখে পড়বো।
মাগুরা কালিবাড়ি পূজা মন্দির প্রহিত সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, অজ্ঞতার অন্ধকার দুর করতে কল্যানময়ী দেবীর চরনে ভক্তরা প্রনতি জানান দেবীর সামনে হাতেখড়ি দিয়ে শিশুদের বিদ্যা চর্চা শুরু হয়। বিভিন্ন পূজা মন্ডপে অঞ্জলি দেওয়া হয় দেবীর চরনে। আয়োজন করা হয় বানী অর্চনার । প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে হয়। এবছর তার কিছুই হবে না। সল্প পরিসরে দেবীর স্বরসতীর পূজা করা হবে। কোন উৎসব আমেজ থাকবে না।