মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর ঝামা গ্রামে ফুটবল খেলা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর এক মাদ্রাসাছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর নাম হাসিব মুন্সী (১৪)।
আজ শনিবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাসিব পলাশবাড়িয়ার ঝামা বরকাতুল উলূম ফাজিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে পড়তেন। সে ওই এলাকার মৃত শায়েখ মুন্সীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, আজ বিকেলে চর ঝামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বল খেলা নিয়ে দর্শকদের দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। থেমে থেমে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষ ইট, চাপাতি, ছুরি, রামদা ও ঢাল-সরকি ব্যবহার করে তাদের সামথ্য দেখায়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কয়েকজন আহত হন।
সংঘর্ষ থামার পর মৃত শায়েক মুন্সীর ছেলে হাসিব মুন্সীকে (১৪) চর ঝামা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের সামনে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করর। পরে তাঁকে প্রতিবেশীরা ফরিদপুরের বোয়ালমারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, সেখানে রাত পৌনে আটটার দিকে আনলেও আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তাঁর মৃত্যু হয়। হাসিব দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে ছোট ছিলেন।
মধুমতি নদীর পূর্ব পাড়ে দুর্গম চর ঝামা গ্রামে রাতে হাসিবের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। মা মাজেদা খাতুন ভাই বোন ও প্রতিবেশিদের কান্না আহাজারি চলছে। পিতৃহারা বাড়ির নিরিহ ছোট ছেলেকে কীজন্য কারা খুন করল – কোনো হিসাবই মেলাতে পারছেন না তাঁরা।
নিহত হাসিবের বড় ভাই আমানত মুন্সী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, খেলা বা জমিজমা নিয়ে কিংবা ওই দুই পক্ষের কারও সঙ্গে তাঁদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে তাঁর নিরপরাধ ভাইকে খুন করল কেন?
এলাকাবাসী নিরপরাধ হাসিব হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচারের দাবি করেন।
মাগুরা মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, পূর্ব বিরোধ ও আজকের ফুটবল খেলা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে তাকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোক কুপিয়ে জখম করে পালয়ে যায়। ওই সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় দোষিদেরকে
আটকের চেষ্টা চলছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।